Author |
I'm Rz Rasel
From Dhaka, Dhaka, Bangladesh
|
|
|
|
|
|
Meghla Aakash |
|
|
Thursday, January 5, 2012 |
|
|
ঘড়িতে সময়টা দেখলেন ইমন সাহেব। রাত তিনটা। বিরক্তিভরে সামনের কাগজটা ছুড়ে ফেললেন তিনি। কিছুদিন ধরেই গল্পটা শেষ করতে চাচ্ছেন, পারছেন না। এদিকে সম্পাদকও বারবার তাড়া দিচ্ছে, মাথাটার যে কী হলো, নিজের ক্ষমতা নিয়েই সন্দেহ হচ্ছে। এমন সময় আবার পাশের বাসার পাগল মেয়েটা চিৎকার শুরু করে দিল, এরপর ইনিয়ে-বিনিয়ে কান্না। দিনের বেলায় কিছু মনে হয় না, কিন্তু রাতের নিস্তব্ধতায় এমন চিৎকার শুনে গা হিম হয়ে এল। এই বাসাটাই যত নষ্টের গোড়া, আশপাশে অদ্ভুত সব মানুষ, কেউ মোটেও মিশুক নয়, আবার রাতের বেলা এমন অদ্ভুত চিৎকার। এখানে আসার পর থেকেই লেখাটা জমছে না। বিরক্ত হয়ে ভাবলেন, কালই নতুন বাসার খোঁজে বের হবেন, এমন অদ্ভুতুড়ে জায়গা তার জন্য নয়। মিতাকে ডাকলেন একবার, কোনো সাড়া নেই। রাতের বেলায় লিখলে তিনি বেডরুমের পাশের ঘরটাতেই বসেন। চেয়ার ছেড়ে উঠে ল্যাম্পটা নেভাতে গিয়েও আবার বসে পড়লেন। আচ্ছা এরপর লাবীবের মৃত্যু আর নোভার পাগল হয়ে যাওয়া—এমনটা হলে কেমন হয়? তাতে শেষটা হবে দুঃখের, আর এমন গল্পই পাঠকের মনে ধরে। দ্রুত বসে পড়লেন তিনি। এক ঘণ্টাও লাগল না শেষ করতে। যাক, শেষটা ভালোই হলো, বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়লেন তিনি। কিন্তু একটু পরই ধড়মড় করে উঠে বসলেন, কে যেন তার পা ধরে নাড়ছে। ব্যাপারটাকে স্বপ্ন হিসেবে ভাবতে চাইলেন, পারলেন না, কারণ তার আগেই একটি মেয়ে কঠিন গলায় বলে উঠল—‘এই যে, তাড়াতাড়ি ওঠেন।’ আশ্চর্য তো! চোর কি? তাহলে এভাবে ডাকবে কেন? নাকি ডাকাত? কিছুই বুঝতে পারলাম না। তবে মাথা যথাসম্ভব ঠান্ডা রেখে বললেন, ‘আপনি কে? এখানে ঢুকলেন কীভাবে?’ ‘আগে বাতি জ্বালিয়ে তাড়াতাড়ি লিখতে বসুন।’ ‘বাব্বাহ, লেখক তিনি, সে খবরও জানে মনে হয়’, মনে মনে বললেন তিনি। মুখে কিছু বললেন না, কারণ মেয়েটার তুলে ধরা হাতে কিছু একটা চকচক করে উঠল। কথামতো উঠে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে চেয়ারে বসলেন তিনি। মেয়েটা পেছনে দাঁড়িয়ে, তবে ফোঁপানোর শব্দ শুনেছেন তিনি। ‘আপনার খাতা খুলে আজ যে অংশটা লিখেছেন তা কাটুন।’ চমকে পেছনে তাকালেন তিনি। মেয়েটা এতসব জানল কী করে? ভয়ংকর অসুস্থ মনে হচ্ছে মেয়েটাকে। এতক্ষণে প্রচণ্ড ভয় পেলেন আনিস সাহেব। ‘তাড়াতাড়ি কর’—এবার ‘তুই’তে নেমে এসেছে। হাত-পা নড়তে চাইছে না, তবুও অনেক কষ্টে পাতাগুলো ছিঁড়লেন। ‘এবার লিখতে থাক’—মেয়েটা বলে যাচ্ছে, আনিস সাহেব লিখছেন, কী লিখছেন, কেন লিখছেন, খেয়ালই করতে পারছেন না। একসময় মেয়েটার বলা শেষ হলো, কিন্তু আনিস সাহেব নড়তে পারলেন না। পেছন থেকে মেয়েটা বলছে, ‘আমার লাবীবকে একবার মেরেছিস তুই, আবার মারলে তোকেও মরতে হবে। এবার ভালোয় ভালোয় শুয়ে পড়।’ হাত-পা যেন চলছেই না, তবুও দাঁতে দাঁত চেপে কোনোমতে উঠে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। মেয়েটা তখনো সামনে দাঁড়িয়ে। বাতির আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে নীল রঙের কাজ করা শাড়ির আঁচল। এটা কিছুতেই কল্পনা হতে পারে না, ভয়ে তিনি ক্লান্তি বোধ করছেন। এভাবেই কখন ঘুম এল জানেন না। সকালে মিতার ডাকে ঘুম ভাঙল। বাতি জ্বালানো দেখেই রাতের সব ঘটনা মনে পড়ল। দৌড়ে গিয়ে দরজা-জানালা সব দেখলেন। ভেতর থেকেই বন্ধ, সারা ঘর চেক করলেন। কেউ নেই। হাঁফ ছাড়লেন তিনি। নিশ্চয়ই রাতে বাতি জ্বালিয়ে শুয়ে পড়েছিলেন, সব দুঃস্বপ্ন। মিতাকে ডেকে সব বললেন। ‘রাত জেগে লেখালেখি করেই মাথাটা নষ্ট করলে, আর এ কদিন টেবিলে বোসো না, আমি লেখাটা পাঠিয়ে দেব।’ কিছুদিন পর ম্যাগাজিনটা খুলে বসলেন আনিস সাহেব। সাধারণত তাঁর কোনো লেখা ছাপলে মিতাই আগে পড়ে। কিন্তু এবার তিনি কৌতূহল বোধ করছেন, শেষ অংশটা থেকেই শুরু করলেন। হ্যাঁ, লাবীব হারিয়ে গেল, এরপর... এরপর ভয়ের একটা শীতল স্রোত তার শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল। কারণ লাবীব আবার ফিরে এসেছে, নোভা ভালো হয়ে গিয়েছে, তাদের বিয়েও হয়েছে। কলবেলের শব্দে সংবিৎ ফিরে পেলেন তিনি। একজন মহিলা এসেছেন। ভীষণ ব্যস্ত ভঙ্গিতে দরজা থেকেই বিদায় নিলেন আবার। মিতা ফিরে এল একটা বিয়ের কার্ড হাতে। ‘জানো এই মহিলার মেয়েটাই পাগল ছিল, নোভা। এখন ভালো হয়ে গিয়েছে। আগামী সপ্তাহে নাকি আবার বিয়েও হবে। কী অবাক কাণ্ড, ভাবো তো!’ |
|
|
|
|
|
|
|
|
Problem In Font |
Download then zip file unzip and install in your system. Or normal font file just install in your system font folder. Rz Rasel |
Bangla Font |
Bangla Font |
|
|
|
|
Post a Comment